খিস্তির পিছনেতে খুঁজছ কি যুক্তি?
শ্রমিকের বস্তি বা কৃষকের মুক্তি?
তুমি খালি থাকো নাকি আনাচে ও কানাচে?
পেট তুমি ভরো নাকি খিস্তি ও আনাজে?
তবে শোনো, তুমি হলে একদম ফাঁকিবাজ,
শ্রমিকের আড়ালেতে গাল দেওয়া ধড়িবাজ।
শ্রমিকেও লাঠালাঠি করে বর বউ-এতে,
তাই বলে, তাই কি গো ঠিক হয় ন্যায়েতে?
‘উইদিন’ খোঁজ করে, কোথা তুমি ‘উইদাউট’?
‘উইদাউট’ করে দেয় ‘উইদিনে’ ‘সর্ট-আউট’।
একথাটা লিখে গেছে টাকওয়ালা লেনিনে,
তাকে আমি ধরে থাকি; ডাস্টবিনে ফেলিনে।
খিস্তির পক্ষে যদি তুমি চলবে,
তবে কেন বাপকে খিস্তি না ডলবে?
কেন তবে শেখাবে না সন্তানে প্রতিদিন,
খিস্তিতে বাঁচাবে না দিনরাত, রাতদিন?
আসলে কি জানো খোকা মোদ্দা সে কথাটা?
খিস্তি সে কিছু নয়, অবোধের বাতাটা।
মার্ক্সবাদ ডাক দেয় সচেতন বদলে,
বদলিয়ে নিতে বলে অ-বলা কে সবলে,
তার স্থানে ভাসি যদি গুয়ে ভাসা জোয়ারে,
শাসকেরই লাভ তাতে, গতি হয় খোঁয়াড়ে।
ক্রোধ যদি খিস্তিতে পায় তার মুক্তি,
তবে তাতে শাসকের বাড়ে জেনো ভক্তি।
কেননা সে ক্ষোভে পোড়ে বক্তার-ই দেহ যে,
সিস্টেম হেসে কয়, গালি দুটো আরও দে!
হয় না, হয় নি, ইতিহাস বলবে,
খিস্তিয়ে দিন কভু এতটুকু সরবে?
খিস্তিতে শুধু পোড়ে নিজের ঐ মনটা,
আর পোড়ে স্বজাতির ‘টুকখানি মানটা।
খিস্তিকে যদি তুমি অস্ত্রই করবে,
তবে বল সমাজের ভিত কিসে গড়বে?
শ্রমিকেও মারপিট করে অতি নিত্য,
তাতে কভু কাঁপে নাকি মালিকের চিত্ত?
বাড়ে নাকি তাতে তার ঐক্য ও একতা,
গড়ে নাকি তাতে তার বিপ্লবী সততা?
খিস্তি সে দেয় দিক, মার্কসবাদী কেন দেয়?
তাতে কিগো বিপ্লবী চেতনায় ধার নেয়?
মার্কসবাদী সর্বদা শ্রমিকের টর্চ লাইট
তাই হতে হয় তাকে বেশি বেশি করে রাইট।
যত সব সংস্কার, আর যত বাজে রেশ,
শ্রমিকেতে জিয়ে রাখে পচা, বাজে পরিবেশ,
তাকেই তো দূর করে মার্কসবাদী ঠিক ঠাক,
পুরনো যা পচা তাকে বাতিলের দেয় হাঁক।
সহজে যা অভ্যেস, অনায়াস যতসব,
সেইসব থাকবেই, ফাঁকিবাজি মতলব।
কিন্তু যা অর্জিত, তার পিছে শ্রম রয়,
পালনে ও প্রচারে, ঘামটুকু পায়ে বয়।
বিপ্লবী চেতনায় যাহা কিছু এক্সেস,
ইতিহাসে প্রমাণিত যত কিছু ননসেন্স,
সেকি কভু বহে নাকি মার্কসবাদী মানুষে?
তালে আর ফাঁক কোথা ফান আর ফানুশে?
ও বলে, আমি করি, এই যদি যুক্তি,
আঁধারেই ঘোরও তবে, ওখানেই মুক্তি!
ব্যক্তির ক্ষোভ ধরে নাচে নৈরাজ্যি,
ব্যক্তিটা জোট হলে, বাড়ে যে অ্যালারজি!
যার যায় সে যে কাঁদে, অসহায় পরিতাপ,
পালটা খুনেই যেন কমে যাবে শোক-তাপ!
কিন্তু যে মার্কসবাদী, সে যে জানে ভুলটা,
তাই তো সে নিয়ে আসে বিপ্লবী বার্তা।
তাই তো সে হাঁক পারে, "এভাবে যে ভুল পথ,
এক গেলে আরও আছে, তাই জানো ঠিক পথ।
তুমি যদি নিতে চাও যথাযথ প্রতিশোধ,
তবে তুমি আগে ছাড়ো হত্যার অতিশোধ"।
সে যে বলে, "চেয়ে দেখো কোথা প্রাণ ভোমরা?
সেটা যদি খুঁজে পাও, জিতবো যে আমরা।
আমি নই, তুমি নও আমরাতে আছে জয়,
তার লাগি সাজ করো, ওঠো, জাগো, নাহি ভয়"!
তাই যারা জয়গান করে যায় খিস্তির,
তাহাদের তরে থাক এইটুকু স্বস্তির,
ভাঁড়ারেতে থাকে যদি শূন্যতা ভর্তি,
খিস্তিতে মজে গিয়ে করে যাও ফুর্তি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন