পোস্টগুলি

অক্টোবর, ২০১৯ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শব্দেরা সব

তোমার, আমার শব্দেরা সব মস্ত মস্ত হাতির মতন, বিশাল শরীর দানবপ্রায়; তবুও তো দিন চলে যায়, রাত কেটে যায়, মাস পুড়ে যায়, বছর ফুরায়! গহন রাতে, নিশির ডাকে, শব্দ করে হাজার ঝিঁঝিঁ আঁধার জুড়ে, আমার নেশার ঘুমের তলে, আবাস খোঁজে, খামচে ধরে শব্দ সুরে। দূরে কোথাও শব্দেরা সব শব্দ করে, আগুন পোহায়, পুড়ে মরে, আমার মগজ শব্দ শোনে, শব্দে বাঁচে, শব্দ খোঁজে, শব্দে বাড়ে। হয়তো কোথাও শব্দগুলো ভীষণ রেগে, মূর্তি ধরে, সতেজ, সেয়ান; হয়তো সেথায় শব্দ মানে, হাত-পাওয়ালা, হাতুড়ি আর কাস্তে ধরা মস্ত জওয়ান। শব্দের সেই রূপের খোঁজে আমার সকল অন্তরালের শব্দ ছোটে, ধীরে ধীরে আমার চোখের জমাটবাঁধা আঁধার কাটে, আলোক ফোটে।

বিষম বস্তু

আবেগ বড় বিষম বস্তু মানিতে চাহে না যুক্তি, মাছভাত বলো , ডালভাত বলো, আবেগীরা খোঁজে মুক্তি! কে পেলো বোয়াল, কার বুড়া হাল, কাহারি বা জ্বলে পুচ্ছ? তাহাতেই সুখ, তাহাতে ভাসুক, শ্রেনীর স্বার্থ তুচ্ছ ! হোক পোকা বেল , কিম্বা নোবেল, তোমার তাহাতে কি? ওসব ভাবি না, কিম্বা জপি না শ্রেনীর স্বার্থটি ! মুক্তির পথ, তাহার শপথ, সংস্কারের পথে! আমরা নাচিবো, আমরা গাহিবো, আবেগ নামক রথে।

স্বপনচারিণী

সুন্দরী তোর মত্ত মাতাল প্রেমে, অঙ্গ আমার রস সাগরের খেয়া। আলিঙ্গনে চুম্বনে না থেমে, তোকে পাবার চরৈবেতির ধেয়া। তোকে ছুঁতে কত দেশের পথে, আল্পস, সেন আর ভলগার বাঁক ঘুরে, রক্ত বসনা, অপরূপ তোর রথে,  আমার সকল পুড়ছে প্রেমের সুরে। জড়িয়ে ধরে, পুড়িয়ে দিয়ে যেদিন, আমার সকল অঙ্গ সবশ করে , জড়িয়ে নিবি মিশিয়ে নিবি সেদিন, স্বপন ভোলা নিদ-জাগানির চরে। সেদিন শুধুই খেলা , বাঁশি , কথা, অনেক রূপে অনেক ভাগে এঁকে , আমরা মিলে জোছনা বাস্তবতা, মিলিয়ে নেবো আগুন প্রেমে সেঁকে ।

নিজের প্রতি

হে ঋত, শুদ্ধ হও। আপন গভীর আমি হতে এইবার বাহিরে তাকাও। যতরাত পেরিয়েছো আপন স্খলনে, জীবন্ত ক্ষুধা হয়ে স্বার্থময় যাপনে, ছোট ছোট আমি আর আমার নিজের, যাহা কিছু সুখ ভোগ কেবল আত্মজের, এইবার শান্ত হও, মুখ তোলও, খোলো চোখ, ভোগ করো ত্যাগেরই; অনন্ত সুখ ভোগ। ইতিহাসে, শাস্ত্রতে লেখা আছে সেই ধাম, “তেন ত্যাক্তেন ভুঞ্জিথা, মা গৃধ, কস্য সিদ্ধনাম”।

সাধ

সন্ধ্যাকাশের স্নিগ্ধ ভালে, ভোর হলে কে আগুন জ্বালে নিত্য ? আমার শহর আজকে আগুন, শারদ বুকে আজকে ফাগুন সত্য। ঝাপসা আমার চোখের তারা, কোথায় যেন যাবার তাড়া; ডাকছে! যাবার পথের দুলকি চালে, গ্রাম ছাড়া ওই ভীষণ ঢালে বাঁকছে! বেহারা ভাই, একটু ধীরে, একটুখানি চাইবো ফিরে; একবার! ওরা যে সব নামছে পথে, নতুন মতে , গল্পে, রথে; আরবার! একবার ওই লাল নিশানের, মদ্দা মজুর আর কিষাণের গপ্প; শুনতে শুনতে ঘুমের দেশে, ঠোঁটখানা 'টুক বাঁকিয়ে হেসে, অল্প মিশে যাবো ভিড়ের দলে, লাল আকাশের আকাশ-তলে, সত্য। তখন হতে ওই ইতিহাস, হবে শুধু আমার নিবাস, নিত্য।

বেঁচে থাকার গান

ছবি
বেঁচে থাকার গান আমার বাস, ভারত ভূম, আমার শান্তি, আমার ঘুম। আমার আশা, কারখানায়, আমার ভাষা শব্দ খায়। এখন রাত, খুব কালো, আমার মা খুব ভালো। আমার মেয়ে, ছোট্ট সে, আমার বাবা, বৃদ্ধ যে। কবে থেকে, কতসে দিন, ক’বার ভোট, কতটা ঋণ? আমার পেট, খাবার চায়, আমার হাত, তাই যোগায়। আমার বন্ধু, চাষ করে, কাঁটাতারের, ওইপারে। আমরা সবাই বাঁচতে চাই, আমরা খুঁজছি, থাকার ঠাঁই। তোমরা তো লোক আনো, কাঁটার তার, নাই জানো! আমরা শুধু বাঁচতে চাই, আমাদের তাই খাবার চাই। তোমার ক্ষতি, তোমার লাভ, আমার ঘরে অন্নাভাব। তোমরা শুধু তালিকা চাও, আমার কথা শুনতে পাও? অসহ্য এই যন্ত্রণা, পেটের ভিতর নাই দানা। মাঝে মাঝে মরতে চাই, মা'র জঠর দেখতে পাই। জঠোর কালো, অন্ধকার, সেথায় যাবো আরেকবার। মায়ের রসে ডুবিয়ে মুখ, করবো উজার আমার দুখ। অথবা এক রাইফেলে, বাঁচার আশায় ছাই ফেলে, তোমার চোখে রাখবো চোখ, দেখবে সেদিন আমার রোখ। আমরাও যে বাঁচতে চাই, সম্মান আর অন্ন চাই। আমার মাটি, আমার দেশ, কিসের সীমা, কোন বিদেশ?

কেন মার্ক্সবাদীরা অভিবাসনের (immigration) ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা করে

ছবি
মূল রচনা নিকোলাস আলবিন ভেনসন         অনুবাদ, অনুলিখন, সংক্ষেপণে চারুদত্ত নীহারিকা রজত                                                                                                    ২০০৮-এর সংকটের শুরু থেকেই, অভিবাসন বিরোধী দল এবং আন্দোলনগুলি, (তাদের নিজেদের) বিকাশ ঘটিয়েছে।  তারা এমনকি, শ্রমিক শ্রেণীর কিছু অংশকে, তাদের প্রোগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রভাবিতও করেছে। এর পরিণতিতে শ্রমিক আন্দোলনের একটি অংশকে, কঠোরতর সীমানা নিয়ন্ত্রণ, মার্ক্সের উদ্ধৃতি ব্যবহার করে নিজেদের অবস্থানকে জাস্টিফাই করা - এই ধারণাগুলির সাথে আপোষ করতে হয়েছে। এই সব অদূরদর্শী নীতিগুলির সাথে মার্ক্স, বা প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় আন্তর্জাতিকের ঐতিহ্যের কোনও সম্পর্ক নেই, যা আমরা দেখাবো। বাণী চয়নের শিল্পঃ ২০১৬ সালের ২৪শে ডিসেম্বর, ম্যাক্লস্কি, ব্রিটিশ কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা, “Morning Star”-এ, তার পুনঃনির্বাচনী প্রচারের অঙ্গ হিসাবে একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেন। এই আর্টিকেলটির লক্ষ্য ছিল, স্পষ্টতই, তার বাম প্রতিপক্ষ আয়ান অ্যালিনসন, যিনি কয়েকদিন আগেই একটি আর্টিকেল লিখেছিলেন শ্রমিকদের স্বাধীনভাবে চলাচল

কেন মার্ক্সবাদ একটি বিজ্ঞান?

কেন মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদ-মাও   চিন্তাধারা)একটি বিজ্ঞান?   চারুদত্ত  নীহারিকা রজত  দ্বারা সংগৃহীত এবং অনুদিত এবং মুল রচনাকার এইচ।স্কট-এর অনুমতিক্রমে প্রকাশিত।  এক) আপনি বলেন যে মার্ক্সবাদ একটি বিজ্ঞান। কিন্তু অধিকাংশ অ-মার্ক্সবাদীদের কাছে এটি একটি বিজ্ঞান নয়, এটি একটি আপ্তবাক্য ( dogma ) । তাহলে আপনি কেন বলেন যে এটি একটি বিজ্ঞান? উত্তর) বিজ্ঞানের সংজ্ঞা দেওয়াটা কোনও মামুলি ব্যাপার  নয়। পদার্থবিদ্যা কেন বিজ্ঞান? বা জীববিদ্যা কেন বিজ্ঞান? কেন জ্যোতির্বিদ্যা একটি বিজ্ঞান কিন্তু জ্যোতিষবিদ্যা নয়? অভিধান বিজ্ঞানকে এই মর্মে সংজ্ঞায়িত করে, অধ্যায়নের বিষয় হিসাবে সুসংবদ্ধ জ্ঞানের একটি বিভাগ এবং জ্ঞান বা জ্ঞানের একটি পদ্ধতি যা, সাধারণ সত্যকে   ব্যাপ্ত করে, অথবা সাধারণ নিয়মাবলীর গবেষণা করে,  বিশেষত সেইসব সাধারণ নিয়মাবলী যা বৈজ্ঞানিক  পদ্ধতির মধ্য দিয়ে আহিত  হয়েছে। [সুত্রঃ Merriam-Webster's Collegiate Dictionary, 10th ed. (1993) ]   এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকে আবার এইভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে,  জ্ঞানান্বেষণের নিয়মানুগ প্রক্রিয়ার নীতিগুলি এবং প্রক্রিয়াগুলি, যা সমস্যার স্বীকৃতি